চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা ও চা খাওয়ার সঠিক নিয়ম

সম্মানিত পাঠক, আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সকলে ভালো আছেন। আমরা অনেকই চা খাই কিন্তু এইটা অনেক সময় আমরা ভেবে দেখি না চা খাওয়ার সঠিক নিয়ম কি? উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো কি? কিভাবে চা খেলে আমরা সুস্থ থাকবো? এবং কখন চা খেলে আমাদের ক্ষতি। চলুন আজকে এ বিষয়ে আলোচনা করা যাক।

আপনারা যারা এই বিষয় সম্পূর্ণ বিস্তারিত জানতে আগ্রহী আছেন আশা করি পোস্টটি সম্পন্ন পড়বেন এবং মনের সকল চাওয়া অনুযায়ী সমস্যা গুলো সমাধান করতে পারবেন করতে পারবেন।

ভূমিকা

ক্লান্তি দূর করতে চায়ের সমতুল্য যেনো কোনো কিছুই হয় না। আর চায়ের মধ্যেও আছে এক অভাবনীয় আকর্ষণ। শরিরকে সতেজ রাখতে চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সামান্য হলেও এতে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। রং চা রক্ত নালীর প্রসারণ বাড়ায় এবং উচ্চ রক্তচাপ,হৃদরোগ,ডায়াবেটিস,  এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে।

আমরা অনেক সময় চা খাই, কখনো ক্লান্তি দূর করার জন্যে,কখনো অতিথি আপ্যায়নের জন্য,কখনো বন্ধুবান্ধবের সাথে আড্ডা দিতে, কিন্তু আমরা এটা কখনো ভেবে দেখি না এটা আমাদের শরীরে কত ক্ষতি করে বা কতটুকু লাভবান হয়। আমরা এটা খেয়ে মনের মধ্যে একটা প্রসান্তি লাভ করি। তবে চা সম্পর্কে অনেকেরই কিছু ভুল ধারণা আছে। এগুলোই আজকে আলোচনা করা হবে।
চা খেতে কার না ভালো লাগে? কিন্তু এটা যদি আমরা সঠিক নিয়মে না খেয়ে অনিয়মে খেতে থাকি তাহলে আমাদের শরীরে অনেক ক্ষতি করে। চা খেলে যেমন উপকারিতাও আছে ঠিক তেমনি অনেক অপকারিতাও রয়েছে। চা খাওয়ার উপকারিতা,অপকারিতা দুধ চা? নাকি লাল চা? কখন চা খাব এবং কোন চা আমাদের ক্ষতি করবে না। নিম্নে এ সকল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।

চা খাওয়ার উপকারিতা

আমরা জানি স্বাস্থ্য রক্ষায় চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সামান্য হলেও এতে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। চা এর মধ্য থিওফাইলিন ও থিওব্রোমিন রয়েছে প্রায় ৭% যা হাঁপানি রোগীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বা উপকারী। চায়ের উপস্থিত পলিফেনালসের পরিমাণ 25% এরও বেশি যা দেহের অভ্যন্তরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

আমরা অনেকেরই অজানা নিয়মিত সবুজ চা (গ্রীন টি) পান করলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও কিছুটা কমে যায়। এছাড়াও কিডনি রোগের জন্য উপকারী, হাইড্রেট কমায় পোকামাকড় কামড়ালে যদি ওই স্থানে চুলকায় ও ফুলে যায় তাহলে (গ্রীন টি) সবুজ চায়ের পাতা দিয়ে ঢেকে দিলে আরাম বোধ হয়। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী। 

এবং ফিগার ঠিক রাখতে অনেকেই সবুজ চা (গ্রীন টি) এর প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে পড়েছে গ্রিন টি প্রথমে ছিল ওষুধ তারপর পানীয় তে পরিণত হয়েছে। শুধু চা বেশি উপকারী দুধ চিনি মেশানো চায়ের স্বাদ অবশ্য বেশি ভালো, তবে বিজ্ঞানীরা হালকা লাল চায়ের কথা বেশি বলে এতে শরীরে কোন রকমের কোন ক্ষতি হয় না।

তবে চা সম্পর্কে অনেকেরই কিছু ভুল ধারণা আছে যেমন চা খেলে রাতে ঘুম আসে না, চা লিভারের ক্ষতি করে, চা চামড়া কালো করে, ইত্যাদি। যদিও চা খেলে গায়ের রং কালো হবে না। চা পান করলে লিভারেরও কোন ক্ষতি হয় না, তবে এটা মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত চা পান করলে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হবে যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য,অবসাদ, এছাড়াও কিছু কমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।

চা খাওয়ার অপকারিতা

প্রতিটা খাবারের যেমন রয়েছে কিছু ভালো ও কিছু খারাপ দিক ঠিক তেমনি চায়েরও রয়েছে কিছু ভালো কিছু খারাপ দিক। আমরা জানলাম ভালো দিকটা এখন জানবো কিছু খারাপ লক্ষণ বা খারাপ দিকগুলো।
আমাদের প্রত্যেকেরই শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খাবারের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ থাকে যা আমরা পরিমাণমতো খেলে আমাদের কোন ক্ষতি করবে না।

কিন্তু পরিমাণের বাইরে গেলে অবশ্যই সেটা আমাদের অনেক ক্ষতিকর দিক হয়ে দাঁড়িয়ে যায় শরীরের জন্য। আমরা যদি চা বেশি পরিমাণে খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের পুরো শরীরের সমস্যা হবে এবং পেট খারাপের সমস্যা দেখাবে খুব স্বাভাবিকভাবে। 

ক্ষুধা নষ্ট হওয়া এবং পেট খারাপ হতে পারে। দিনের পর দিন অতিরিক্ত চা খেলে বা চায়ের প্রতি আসক্তি যখন আমাদের হয়ে যাবে তখন আমাদের খাওয়ার প্রতি অনিচ্ছা এবং খাওয়ার প্রতি রুচি কমে যেতে থাকবে ফলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে নিজের শরীর বঞ্চিত থাকবে। যে কোন খাবার বেশি খেলে প্রথমেই যেটা হয় সেটা হচ্ছে হজমের সমস্যা অতিরিক্ত চা খেতে গেলে হজমের সমস্যা হবে।

এবং এর পাশাপাশি হতে পারে বুক ব্যথা এবং নিদ্রা/ঘুম নষ্ট হতে থাকবে এবং ঘুম না হওয়ার কারণে নিজেরটা একটু খিটখিটে হয়ে উঠবে ইত্যাদি আরও সমস্যা দিন দিন বেড়েই যাবে।

চা খাওয়ার সঠিক সময় গুলো কখন

অধিকাংশ পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের মতে সকালের দিকে চা পান করে বেশি উত্তম কারণ এতে রয়েছে ক্যাফিন যা শরীর সতেজ করে। চায়ে মূলত কোন ক্যালরি নেই। ক্যালরি নির্ভর করে কতটুকু চিনি ও দুধ মেশানো হয় তার উপর, যদি ক্যালোরি ফ্রি চার্জ পান করতে চান তাহলে দুধ চিনি ছাড়া চা পান করতে হবে।

যদি কারো শারীরিক সমস্যা বা জটিলতা না থাকে তবু হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য কোন ভারী খাবারের পরও চা পান করা যায়। সময় মত চা পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয় এবং হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

রং চা ভালো নাকি দুধ চা খাওয়া ভালো

চা হলো বিশ্বজুড়ে ছোট বড় কমবেশি সবার পছন্দের একটি পানীয়। তবে দুধ চা ও লাল চা, এই দুই ধরনের চায়ের মধ্য রয়েছে আলাদা আলাদা গুণ বা বহুপ্রকার উপকার। রং চা হলো চা পাতা থেকে তৈরি একটি পানীয় যা চিনি, দুধ ছাড়াই পান করা যায়। এবং এতে দুধ মেশানো হলেই দুধ চা হয়ে যায়। 

রং চা রক্ত নালীর প্রসারণ বাড়ায় এবং উচ্চ রক্তচাপ,হৃদরোগ,ডায়াবেটিস, এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য অধীক পরিমানে ভুমিকা পালন করে। এর মধ্যে ক্যাটেচিন নামক আন্টিওক্সিডেন্টের কারনে এই গুনাগুন রয়েছে শুধু তাই নয় রং চা বা লাল চা হজম শক্তি বাড়ায়,ক্যান্সার প্রতিরোধ করে,হার্ট ভালো রাখে ও বেনীর ক্ষমতা বাড়ায়। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ওজন কমায়ে হালকা শক্তিশালী করে সৌন্দর্য করায় ও চোখ সুরক্ষিত রাখে। এবং দুধ চা এর মধ্যে ক্যাসেইন নামক প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয়ে কমপ্লেক্স যোগ তৈ্রি করাই ক্যাটেচিনকে বাধা দেয় ফলে দুধ চা রক্তনালির প্রসারন ঘটাতে ব্যর্থ হয়। দুধ চা বেশি মাত্রায় পান করলে ডায়াবেটিক্স,উদ্বেগ, অনিদ্রা, তৈলাক্ত ত্বক, ব্রন, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদির কারণ হতে পারে। 

তাই স্বাস্থ্যের জন্য দুধ চাচ্ছে রং চা অন্যতম ও উত্তম। একজন চা প্রেমির কাছে দুধ চায়ের চেয়ে রং চা দিনে দুই থেকে তিন কাপ খাওয়া উত্তম বা উপকারী

লেখক এর মন্তব্য

উপরের এই সম্পূর্ণ পোস্টে আমি চেয়েছি সবার মনের মধ্যে চা সম্পর্কে এসব সচরাচর প্রশ্নগুলো থেকে থাকে যে চা কিভাবে খাওয়া উচিত কিভাবে খেলে শরীরের উপকার হবে কিভাবে খেলে শরিরের ক্ষতি হবে এ সকল বিষয়গুলো তুলে ধরতে। এর মধ্যেও যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে দয়া করে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

এবং যদি আপনার মনে হয় যে কোন কিছু এর সাথে সংযুক্ত করা উচিত অনুগ্রহ করে কমেন্টে জানিয়ে দিবেন। আর যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে পরবর্তী আপনার কোন বন্ধুদের সাথে আশা করি শেয়ার করবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url